আরিফ সুমন/ অনলাইন ডেস্ক।।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অস্বাভাবিক ঢেউয়ের তিব্রতায় বালুক্ষয় ও সৈকত সংলগ্ন সরকারি জমি দখল করে অবৈধ পাকা, আধাপাকা স্থাপনা নির্মাণের জন্য ক্রমশ বিলিন হয়ে যাচ্ছে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটার সৈকত প্রধান অংশ। বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটার সূমুদ্র সৈকতের চিরো চেনা সৌন্দর্য্য। মুষ্টিমেয় কিছু ভূমিদস্যু সৈকতের মূল রক্ষাবাঁধ থেকে সৈকত লাগোয়া সরকারি জমিতে পাকা, আধাপাকা স্থাপনা নির্মান করে বিলিন করে দিচ্ছে পর্যটকদের দর্শনীয় স্থান। হারিয়ে যাচ্ছে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত মনোরম দৃশ্য অবলোকনের সমূদ্র সৈকত কুয়াকাটা। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকা স্বত্তেও সৈকতের মূল রক্ষাবাঁধ থেকে শুরু করে সৈকত সংলগ্ন একের পর এক নির্মাণ করা হচ্ছে পাকা, আধাপাকা স্থাপনা। ভূমি প্রশাসনের নিষেধ থাকা স্বত্বেও এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে বেপরোয়া কিছু চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা। কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই সৈকত সংলগ্ন সরকারি জমিতে নির্মান করে চালিয়ে যাচ্ছে দখল সন্ত্রাস । যা কোন একটি পর্যটন নগরীতে সম্পূর্ণ বেআইনি। কিন্তু কোন ভাবেই অবৈধ দখল কার্যক্রম বন্ধ করা যাচ্ছে না। আইনী জটিলতার অজুহাতে ভূমি প্রশাসন এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মান বন্ধ করতে পারছেনা বলে জানান স্থানীয় ভূমি কর্তৃপক্ষ । নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দখল এবং নির্মাণ কাজ চালিয়ে আসছে কিছু ভূমিদস্যু। আবার কেউ কেউ এসব জমি কোটি টাকায় বিক্রয় করার অভিযোগ রয়েছে। সরকারি জমি দখল দূষণের এমন দৃশ্য দেখে হতবাক পরিবেশবিদরা। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) বরিশাল বিভাগীয় সমন্নয়কারী লিংকন বায়েন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সৈকত এলাকায় সরকারি জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ পরিবেশ আইনের বিপরীত। এভাবে দখল দূষণ চলতে থাকলে সৈকত এলাকার পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে। তাই এখনই দখল রোধে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে তিনি দাবি করেন। এর ফলে সরকারের গৃহীত পরিকল্পিত নগরী গড়ার প্রকল্প ভেস্তে যেতে বসেছে। 'সৈকতের মূল রক্ষাবাধেঁর বাহিরে সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন এলাকায় কোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ কাজ করা যাবে না' এই মর্মে দেশের উচ্চ আদালতে নির্দেশনা রয়েছে। উচ্চ আদালতের এমন নির্দেশনা অমান্য করে সরকারি জমি দখল এবং স্থাপনা নির্মাণ কাজ চলে আসছে। যার ফলে এক সময় বিলিন হয়ে যেতে পারে সৈকতের অস্তিত্ব। প্রকৃতিক দূর্যোগ ও বালুক্ষয় এর জন্য এমনিতেই সৈকত আজ বেড়িবাঁধ ছুঁই ছুঁই। এরপর যদি এভাবে সৈকত দখল করে স্থাপনা নির্মান হয় তাহলে কুয়াকাটা সমূদ্র সৈকত এক সময় তার চিরচেনা রূপ হারিয়ে ফেলবে, হয়ে যাবে পর্যটক শূন্য। এতে দেশের পর্যটন শিল্পে বড় ধরসের ধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ভূমি কর্মকর্তাদের উদাসীনতার সূযোগে পর্যটকদের বিনোদনের স্থান গুলো ঐসব ভূমিদস্যুরা নিজ মালিকানা দাবি করে সরকারি জমি দখল করে গড়ে তুলেছে আবাসিক হোটেলসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
গত ২৮ শে আগষ্ট (শনিবার) সরেজমিনে দেখা যায়, সৈকত লাগোয়া সরকারি জমি দখল সূত্রে হোটেল সানরাইজ মালিক কতৃপক্ষের ভবন নির্মান কাজ করছে। কিন্তু জানা যায় নির্মাণএই কাজে জেলা প্রশাসকের নিষেধাজ্ঞা থাকা স্বত্বেও, নির্মাণ কাজ চলছে রাতের আধাঁরে। এ বিষয় হোটেল সানরাইজ মালিক কে,এম শাহজালাল বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বিরোধীয় জমিতে ঘর দুয়ার নির্মাণ, সংস্কার ও ব্যবসা বানিজ্য পরিচালনা করতে পারবেন তিনি। সেখানে সরকার পক্ষ কোন প্রকার বাঁধা প্রদান করতে পারবেন না। আদালতের এমন রায় নিয়েও স্থানীয়দের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কিন্তু সানরাইজ কতৃপক্ষ নতুন নতুন আধাপাকা ও টিনের ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দিয়ে আয় করে নিচ্ছে কোটি টাকা। তথ্যসূত্র মতে দৃশ্যমান, এসব দখলদারদের তালিকায় কুয়াকাটা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও কুয়াকাটা পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি আঃ বারেক মোল্লা'র নাম জড়িয়ে আছে। তিনি নিজেও বন্দবস্তের নামে সৈকত লাগোয়া জায়গা দখল করে একটি মার্কেট নির্মান করেন। এসব অবৈধ দখলদারদের বিষয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা উপজেলা ভূমি প্রশাসনকে অনুরোধ জানালেও উপজেলা ভূমি কতৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। শুধুমাত্র মৌখিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে ভূমি প্রশাসনের কার্যক্রম। এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি ) জগৎবন্ধু মন্ডল জানান, সানরাইজ কতৃপক্ষ সেমি পাকা ঘর তুলছে শুনে মহিপুর উনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নতুন কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে পরবেনা বলে জানান।
উপদেষ্টাঃ মোঃ মিজানুর রহমান বুলেট, সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ আরিফ মাহামুদ সুমন, প্রধান নির্বাহী সম্পাদক: মোঃ বশির উদ্দিন মাষ্টার, বর্তা সম্পাদকঃ মোঃ রফিকুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ মোঃ সিদ্দিক মোল্লা
আঞ্চলিক অফিসঃ মহিপুর থান সড়ক, মহিপুর, পটুয়াখালী। যোগাযোগঃ 01712926762; 01711583703; 01718260171;01615525540; Email: news.dainikkalaparaprotidin@gmail.com